প্রিমিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ
প্রিমিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৯৮৪ সালে প্রিমিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে প্রিমিয়াম স্কুল এন্ড কলেজটি এলাকার দানশীল ব্যক্তিবর্গের সাহায্য—সহযোগিতা, চাঁদা, দান, অনুদানে কোনরকমে তার কার্যক্রম চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্র—ছাত্রীর সংখ্যা (প্রায় ৬০) ও দান—অনুদানের পরিমাণ কমে নূন্যতম পর্যায়ে পৌছায়। শিক্ষক—কর্মচারীদের প্রায় ৩ বৎসরের বেতন বকেয়া থাকে। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় এলাকার সচেতন মহলে হতাশা নেমে আসে। জনগন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বড়ই চিন্তিত ও উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েন। তাঁরা প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখার উপায় খুঁজতে থাকেন।
কলেজ গর্ভনিং বডির ২৩/০৮/১৯৯২ ইং তারিখের সভায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সমস্যার সমাধানকল্পে কলেজ গর্ভনিং বডির সদস্য জনাব শফিকুল ইসলাম প্রস্তাব করেন যে, “যদি কোন দানশীল ব্যক্তি তার নামে কলেজের নামকরণ করতে চান তাহলে বিধি মোতাবেক অর্থ প্রদান করলে উক্ত দাতার নামে কলেজের নামকরণ করে আর্থিক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে”। উক্ত প্রস্তাবে গর্ভনিং বডির সভায় সর্ব—সম্মতিভাবে গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব রফিকুল ইসলাম।
কলেজ গর্ভনিং বডির ০৭/১২/১৯৯২ ইং তারিখের সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাম মোল্লা তবিবুর রহমান সাহেবের উপস্থিতিতে বাবু জিতেন্দ্র চন্দ্র দে এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উক্ত সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয় এবং পুনরায় আর্থিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দানশীল ব্যক্তির নামে কলেজের নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়। 

উক্ত সাধারণ সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয় যে, দাতার দানকৃত অর্থ ব্যয় করার জন্য উপরোক্ত কমিটি একটি মাস্টার প্লান প্রণয়ন করেন। অত্র মহাবিদ্যালয়ের আর্থিক দৈন্যতা ও সার্বিক উন্নয়নের প্রয়োজনে দীর্ঘসূত্রিতার আলাপ-আলোচনা ও কার্যপ্রণালিতে দাতার দান গ্রহণ করার জন্য স্থানীয় জনসাধারণ, নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও কলেজ কতৃর্পক্ষ সম্পূর্ণরূপে যেহেতু মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন সেহেতু অদ্যকার সভায় উপস্থিত সদস্য মহোদয়গণের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করে ০২ নং আলোচ্য বিষয় কলেজের নামকরণ প্রসঙ্গে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়।
সম্মানিত অধ্যক্ষ আবু মোঃ মোখলেছুর রহমান সাহেবের বক্তব্যের শেষে সভাপতি মহোদয়ের অনুরোধক্রমে গর্ভনিং বডির সদস্য জনাব শফিকুল ইসলাম বলেন, কলেজের নামকরণ করার ব্যাপারে গর্ভনিং বডির ২৩/০৮/১৯৯২ ইং তারিখের সভার সিদ্ধান্ত নং ৮(ক)—এ সিদ্ধান্ত হয় যে, দাতার নামে কলেজটির নামকরণ করা হবে। তবে প্রিমিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ শব্দটি সর্বাগ্রে থাকতে হবে। সুতরাং অদ্যকার সভায় পুনরায় একই বিষয়ের সিদ্ধান্তের জন্য আলোচ্য বিষয়ের কি প্রয়োজন ছিল?  তাহার বক্তব্যের জবাবে সদস্য—সচিব অধ্যক্ষ মোঃ মোখলেছুর রহমান সভায় ব্যক্ত করেন যে, দাতা প্রিমিয়াম শব্দটি মহাবিদ্যালয়ের নামকরণের বেলায় দাতার নামের পরে প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করেছেন। অতঃপর সভায় সম্মানিত সভাপতি ২0/১১/১৯৯৫ তারিখের সাধারণ সভায় গঠিত বিশেষ কমিটি এতদসংক্রান্ত ব্যাপারে কি মতামত ব্যক্ত বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা সদস্য—সচিব অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট জানতে চান। অধ্যক্ষ মহোদয় জানান যে, বিশেষ কমিটি দাতার দান গ্রহণ করে মহাবিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার জন্য সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। কিন্তু কি নামকরণ হবে তা স্পষ্ট করে বলে না দিলেও বিশেষ কমিটি কোন নামেই কোন আপত্তি প্রকাশ করেননি। অর্থাৎ দাতার নামের আগে কিংবা পরে প্রিমিয়াম নামটি ব্যবহারের জন্য বিশেষ কমিটির কোন আপত্তির কিছুই নেই। দাতার প্রস্তাবিত কোন নামেই বিশেষ কমিটির কোনরূপ অসম্মতি নেই।

কলেজ পরিচালনার আর্থিক দায়িত্বভার গ্রহণ করে আলহাজ্ব আব্দুস ছালাম সাহেব কলেজের লেখাপড়া ও অবকাঠামো উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। তিনি প্রথমেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিভাগ ও বাণিজ্য বিভাগে শর্টহ্যান্ড টাইপ বিষয় চালুকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কলেজটিকে দেশের বৃহত্তম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ব্রত নিয়ে তিনি নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজ মেধা, শ্রম, অর্থ অকাতরে বিলিয়েছেন। উল্লেখ্য এককালীন অনুদানের  ১৫,০০,০০০/— (পনের লাখ) টাকা প্রদানের পরেও জনাব মোঃ আব্দুস ছালাম সাহেব ২০১৩ সন পর্যন্ত শিক্ষক—কর্মচারীদের বেতন ভাতা কলেজের দৈনন্দিন খরচ ও উন্নয়ন কাজের যাবতীয় অর্থ নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করেন।  ইতোমধ্যে তিনি স্নাতক (পাস) স্তরে বিএ, বিএসএস বি.বি.এস ও বি.এস.সি কোর্স এবং হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থপনা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বাংলা, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করেছেন।
তিনি হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্স প্রথম পর্ব ও শেষ পর্ব   (রেগুলার ও প্রাইভেট) চালু করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীন ব্যবসায় ম্যানেজমেন্ট শাখা এবং উন্মুক্ত বিশবিদ্যালয়ের এইচএসসি প্রোগ্রাম চালু করেছেন। যার ফলে এলাকার সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা নিজ বাসায় থেকে স্বল্প খরচে উচ্চ শিক্ষা লাভ করছে।
জনাব আব্দুস ছালাম ব্যক্তি জীবনে একজন সদাচারী, বিনয়ী সাদামনের মানুষ এবং একজন সফল পিতা ও শিল্পপতি। তার ০৩ ছেলে ও ০২ কন্যা যারা উচ্চ শিক্ষিত এবং শিল্পপতি হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত।  তাই জনাব আনিসুর রহমান সাহেবকে গভর্ণিং বডির আজীবন দাতা সদস্য।
দৃষ্টিনন্দন অডিটোরিয়াম, অনার্স ভবন, বিজ্ঞান ভবন, আই.সি. টি ভবন, কলেজ ক্যান্টিন, ছাত্রাবাস, শিক্ষক ডরমেটরি। কলেজটি জাতীয়করণ তালিকাভুক্ত হওয়ার কলেজ পরিবার ও শামসুর রহমান সাহেব সহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্য সদাসয় সরকার প্রধানের নিকট কৃতজ্ঞ। কলেজের লেখাপড়ার মান, পরিবেশ, অবকাঠামো উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে যাতে করে এলাকার আপামর জনসাধারণ স্বল্প খরচে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারে এই আমাদের প্রত্যাশা।

অধ্যক্ষ্য

মোঃ সাজেদুল ইসলাম

সভাপতি

মোঃ আকরাম হোসেন

প্রিমিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ

ইআইআইএন: ১২৩৪৫, প্রতিষ্ঠান কোড: ১৩৫৭
হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ।
Scroll to Top